সেই এক অতি মনোরম স্থান,
ঘুম ভাঙ্গে ভোরে আজানের সুরেসাঁঝবেলা কীর্তনগান ।
সুন্দরী কুশিয়ারা মন্থরে বয়ে যায়,
লঙ্গাই ধলাই মধুরার তাড়া,
তারি পারে পারে সুপারি বনের ধারে
খড়ে ছাওয়া ঘর মধু-ঝরা ।
গাছ-গাছালির ফাঁক দিয়ে
সূর্য উঠছে ছায়া আলপনা এঁকে ,
সন্ধ্যা আকাশে লক্ষ তারার বাতি,
জোনাকি আলোয় পথিকেরা পথ দেখে ।
টিলার কোলেতে ধানখেত পাশে
আনমনে বসে দুই পা ছড়ায়ে
রাখাল বাজায় বাঁশরিতে সুর,
ভোলা গরু আনে ফিরায়ে ।
ফাল্গুনে ডাকে কোকিল বউ-কথা-কও,
গ্রীষ্ম সাজায় ডালি ফুলে ও ফলে,
বর্ষায় দ্বীপ জেগে থাকে টিলাগুলো,
কাঁঠাল-বোঝাই নৌকো চলছে বিলে ।
শরতে শিশির সকাল সন্ধ্যাবেলা
টুপটাপ ঝরে টিনের চালের পরে,
শিউলি গন্ধে দিগন্ত মাতোয়ারা,
পেঁচার পৃষ্ঠে লক্ষ্মী নামছে ঘরে।
বাঁকে গাঁথা দুই সোনালি ধানের ভার
ঝন ঝন বাজে, আলপথে চলে চাষি,
নবান্ন হবে আজকে অথবা কাল,
ঢেকির শব্দে মিশে যায় কলহাসি ।
স্বপ্ন আমার তেমনি মিলিয়ে গেল
ভোরের কুয়াশা যেমন মিলায়ে যায়,
অনেক বছর কেটে গেল তার, তবু
কুশিয়ারা বয়ে চলে সকাল ও সন্ধ্যায় ।
(কবিতাটি করিমগঞ্জের নববার্তাপ্রসঙ্গ পত্রিকাতে বছর তিনেক আগে প্রকাশিত হয়েছিল)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন