“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শনিবার, ২৪ মার্চ, ২০১২

মেন ফেইস স্টিঙ্ক বাগ (Man face Stink Bug)




           ঘটনাটা ২০০৩-এর। তারিখ ১৫ই সেপ্টেম্বর। মানুষের মুখাবয়ব পিঠে থাকা অদ্ভুত দর্শন এক পোকার দেখা পাওয়া গেছিলো শিলচরের অদূরবর্তী পয়লাপুল নামক এক মফঃস্বল গঞ্জ শহরে। সুপরিচিত লেখক এবং সাহিত্যিক গনেশ দে মহাশয়ের বাড়িতে। সন্ধ্যার পর অন্ধকারে গায়ে এসে বসেছিল পোকাটা। হতচকিত হয়ে গা থেকে ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করেও কিচ্ছু লাভ হচ্ছিলো না। পরে বিজলি বাতির নীচে এসে আবিষ্কার হল অদ্ভুত দর্শন এই পোকাটি। লম্বায় ২.৮ সেন্টিমিটার এবং প্রস্থে ১.৬ সেন্টিমিটারের এই পোকাটি অনেকটা গান্ধিপোকার মত হলেও তার কমলা রঙের পৃষ্ট দেশে কালো রঙ দিয়ে আঁকা রয়েছে অবিকল টুপি পরা এক মানুষের মুখাবয়ব। কৌতুহলী অনেক মানুষ এটা দেখার পর মন্তব্য করেছেন, এ ধরনের পোকা এ অঞ্চলে এর আগে আর দেখেন নি। ঘটনা চক্রে তার পরের দিন এক শিক্ষামূলক ভ্রমণে পয়লাপুলের পাশের অঞ্চল পরিদর্শনে গিয়েছিলাম কিছু ছাত্র নিয়ে। সঙ্গত কারণেই পোকার কেচ্ছাটা আমাদের কানে এসে পৌঁছে গেছিলো। ফেরার পথে পোকাটাকে সঙ্গে নিয়ে এলাম শিলচরে। এর পরেও দু-তিন দিন জীবিত ছিল পোকাটা। পরে মারা গেল। এর খ্যাদ্যাভ্যাস কি? কোন গাছের রস খায় কিছুই জানা ছিল না। তাই বাঁচানো গেল না বেচারাকে।
         ব্রিটিশ মিউজিয়াম অব নেচারেল হিসট্রি-র ওয়েব সাইট থেকে পোকাটাকে সনাক্ত করা হয়েছিলো। বৈজ্ঞানিক নাম , Catacanthus incarnates (Drury), ইংরাজি নাম, মেন ফেইস স্টিঙ্ক বাগ (Man face Stink Bug) । সন্ধিপদী জাতের এই প্রাণীটি হেমিপ্টেরা (Hemiptera) বর্গের অন্তর্গত। সাধারণতঃ মালয়েশিয়ার , পেরেখ, ট্যাপা হিলস (Perek, Tapah Hills)–এ এদের বাস। মুম্বাই থেকে প্রকাশিত বন্যপ্রাণী বিষয়ক বিখ্যাত ম্যাগাজিন, Sanctuary Asia-র ভলিউম সংখ্যা- XXV(4) আগস্ট, ২০০৫-এ এঁর বিবরণ সম্পূর্ণ প্রকাশিত হয়েছিলো।
          উত্তর পূর্বাঞ্চল এমনিতেই জৈববৈচিত্রে ভরপুর। জৈববৈচিত্রে নিয়ে যারা নাড়াচাড়া করছেন, তাঁদের কাছে খবরটা নিশ্চয়ই খানিকটা হলেও ভাববার খোরাক জোগাবে। খবরটা সাবেক পুরনো হলেও 'পুঞ্জমেঘে'র পাঠক কুলের কাছে আনকোরা নতুন। তাই তুলে ধরলাম। আগ্রহোদ্দীপক হবে এই আশায়...।

৩টি মন্তব্য:

নামহীন বলেছেন...

These kind of insect having sucking type of mouthparts. They suck the cell sap of plants.

ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায় বলেছেন...

এখন ঈশাণ ... দারুণ সুন্দর হয়েছে । পত্রিকার সাজ-পোষাক , অলঙ্করণ আমার কাছে খুব লোভনীয় লাগছে - বার বার ঘুরতে ইচ্ছে করে । এত পরিচ্ছন্ন ব্লগ আমি অন্তত খুব বেশি দেখিনি । সম্পাদকের হাতের গুণ ।

সুশান্ত কর বলেছেন...

ধন্যবাদ ফাল্গুনিদা। আসলে তেমন কিছু করবার পরামর্শ এসছিল, তাই। আপনার ভাল লাগল জেনে ভালো লাগছে।