“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ১২ মার্চ, ২০১২

চাঁটগা রোসাঙের কবি দৌলত কাজীর কবিতা



বাংলা সাহিত্যের আদিকবিদের অনন্য ছিলেন চাঁটগা রোসাঙের কবি দৌলত কাজী। রোসাঙের রাজা থিরি-থু ধম্মা ( শ্রী সুধর্মাঃ ১৬২২-৩৭)র শাসন কালে তাঁরই লস্কর উজির আশরফ খানের অনুরোধে এই সুফী কবি একটিই কাব্যগ্রন্থ লিখেছিলেন, ‘লোর-চন্দ্রানী’ এরই একটি ছোট অংশ এখানে তুলে দিলাম। এ অনেকটা ঋতু সংহারের মতো। কাহিনির এক নায়িকা ময়নাবতীর কাছে এসে এক লম্পট রাজা ছাতনের দূতী মালিনী বারোমাসের বিরহ বর্ণনা করতে শুরু করলে । তারই একটি ভাদ্রমাসের বর্ণনাতে কল্যাণ রাগে জয়দেবের ছাঁদেঃ 
               ******

ভাদ্রমাসে  চন্দ্রমুখী         সুচরিতা কামিনী
                             একাকী বসতি অতি ঘোরং
অধর মধুরৌ                তাম্বুল বিনে ধুসরৌ
    নিচল চকোর আঁখি ঝোরং।
    ময়নাবতী, তেজ নিজ মান পরিখেদং
দুরন্ত বিরহানলৌ           দহতি তব অন্তরৌ
                             তথাপি ন চেতই ময়না-চেতং।
বনফুল-মঞ্জরী               কিমিতি অতি সীদতি
    মলিন আঞ্জন মুখ ভেশং
বিষাদিত বিলপসি           সকল দিনযামিনী
                             অবিরত বিকল বিশেষং।
সিন্দুর বিনে শীশৌ          মলিন কেশ ভেশৌ
    কিমিতি মলিন তনুচীরং
শূন্য সুমন তনৌ             শূন্য পাট সিংহাসনৌ
    শূন্য সুবর্ণমন্দিরং
শ্বেত ঋতু বরিষণ            নিস্ফল ধনি বঞ্চসি
     ন শুনসি হিত সুখসারং
এ ভবসুখসম্পদৌ           কিমিতি ধনি বঞ্চসি
     তব তাত জগ-অধিকারং।
ভনতি কাজী দৌলত        দূতী চাটুপাট কৃত
     সতীষর্ণে  অট বিষ মানং
লস্কর শুণমণি                দানে কল্পতরু
    শ্রীযুত আশরাফ –খানং ।।

কোন মন্তব্য নেই: