“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ১৫ আগস্ট, ২০১৩

স্বাধীনতা দিবস


















৫ আগস্ট , ১৯৯২
লাল কেল্লার প্রাকার থেকে ভাষণ দিলেন
প্রধানমন্ত্রী পি বি নরসিমা রাও।
তিনি বিয়াল্লিশের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন
প্রথমেই।
তারপরেই পাড়লেন
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার কথা।
নয়া অর্থনীতির কথা
তিনি আরো একবার বোঝালেন খুব সাবলীল ভাষায়।
সিকিউরিটি স্ক্যামের প্রতি
তিনি যে কী চরম
তা স্মরণ করিয়ে দিতে ভুল করেন নি।
তারপরেই তিনি অসমের কথা পাড়লেন,
জানালেন যে
স্রোতের বিরুদ্ধে রয়েছে এখন
মাত্র গুটি কয়।
কাশ্মীরের কথা
যখন তিনি বলতে যাবেন
পাকিস্তানকে গালাগাল করতে গিয়ে
তিনি খুব ক্লান্ত বোধ করছিলেন।
তবু তাঁর গণতন্ত্রপ্রিয়তার কথা,
সময় হলেই নির্বাচন করিয়ে নেবার কথা
আমাদের জানালেন।
পাঞ্জাবের কথা বলতে গিয়ে,
অনেক্ষণ ধরে হাততালি পাচ্ছিলেন না—
একটুই জোরের সাথেই মনে করিয়ে দিলেন,
কত বছর পর
তার সরকার সেখানে নির্বাচন করিয়েছে।
সন্ত্রাস বলতে গেলে
এখন সেখানে নেই।
যে গুতি কয় মানুষ
সেখানে রোজ মরে
সফলতার তুলনায়
সে সংখ্যা খুব কম—
এই কথাটা তিনি যখন বোঝাতে যাবেন,
তার চোখ তখন
সামনে বসা শ্রোতাদের দিকে।
শ্রোতাদের হাতের দিকে।
হন্যি হয়ে খুঁজে ফিরছিল—
কোন্ হাতে তালি বাজছে না।
সে  হাতগুলোর সংখ্যা
খুব কম।
কিন্তু ঐ কম হাতগুলোকে
যে তার কী ভীষন ভয়
তাই আমরা আঁচ করছিলাম,
যখন দেখছিলাম
স্বাধীনতা দিবসে
তিনি নিজেকে বন্দি করে রেখেছেন
এক কাঁচের ঘরে।
তাঁর সামনে পেছনে
ডানে-বায়ে,
উপরে নিচে
প্রহরী অগুনতি।
গোটা মাঠ ঘিরে অন্ততঃ
হাজার কয়েক।
এমন কি আকাশেও ফিরছে স্টেনগান হাতে।

আমাদের খুব কষ্ট হলো—
গুটি কয় মানুষ,
এখনো এই দেশ আর তার নেতাকে
বুঝতেই পারলো না!

কোন মন্তব্য নেই: