“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১২

সহশিল্পী...



রুনু মারা গেলো।
নাহ, সে ইদানিং মরেনি,
হতে চলল প্রায় বছর দুয়েক
কি একটা জটিল অসুখ হয়েছিলো শুনেছিলাম।
মাস দিন বিছানায় আর তারপরই
ইহলীলা সাঙ্গ।

সে ছিলোনা কোন বড় ব্যক্তিত্ব।
সাধারণ এক গরু পাচারকারি,
ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে গরু পাচার করত
আর মাঝে মাঝে মানুষ।
আত্মীওদেরে গাঙ পার করাতে সেই প্রথম ভরসা।
মুতলিবের যেখানে দুটো খেয়া
তাঁর সেখানে পাঁচ/ ছটা হয়ে যেত মাসান্তে।

এভাবেই চিনতাম তাকে
সেই ছোটবেলা থেকে...
অবসরে চায়ের দোকানে তাঁর গলার উঁচু স্বর
আর হাসি উল্লাস, ঢং তামাসায় গ্রামের ছোট্ট বাজার থাকতো
একদম রমরমা।

হাজার টাকা পাওনা ছিল আব্বার।
বার কয়েক তাগদা দিয়েছি
আর প্রতিবারই একটা নতুন তারিখ নিয়ে
ঘরে ফিরতাম রাগে।
আর তারপরই একদিন দুটো য়্যাব্বড় মুরগী নিয়ে
ঘরে সটান হাজির।
বুঝলাম “টাকা টা ভুলে যান, মুরগীতেই কাজ চালান”

আজ সে নেই।
ওই তাগদা ছাড়া তাঁর সাথে কোনদিন কথা ও হয় নি।
কিন্তু বেশ চিনতাম তাকে।
ও হয়তো কোনদিন স্বপ্নেও ভাবেনি
যে তাকে নিয়ে কেউ কোনদিন লিখবে।
সে ভালো মানুষ কিনা খারাপ ছিল জানিনা,
তবে নাটকে যে ও এক সহশিল্পী ছিল
আজ যেন সে কথা বার বার মনে পড়ছে।
আজ সে ও এক কবিতা, অথচ সে জানলোই না।

মিফতাহ উদ্দিন
৮ নভেম্বর, ২০১২
মাদ্রাজ

কোন মন্তব্য নেই: