“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

শুক্রবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৬

কোন কথা নয়



প্রতিবাদ নয়।
প্রতিরোধ নয়।
প্রতিশোধ নয়।
শুধু দেখে যেতে হবে , শুনে যেতে হবে, কথা হবে না।

যুদ্ধের ক্ষত অবশিষ্ট অভিশাপের বীভৎস সংরাগ!
ইরাক যুদ্ধে জেহাদী আই এস আই এসের যৌন দাসীরা
জীবনের জন্য,  ইয়াজিদি ফুল ফুল মেয়েগুলি
আত্ম সমর্পণে,  ফুলের মত দেহদানে নারাজ ছিলো।
যুদ্ধবাজ, কামুক জেহাদী যুদ্ধবাজ নষ্ট দংশনে
ঐ ফুলের মত যুবতী মেয়েদের দেহ ছেঁড়াখোড়া করে।
আহা! ফুল ফুল বন্দিনী মেয়েগুলি, আহা সন্তানবতীরা!
আজন্ম দেহটাকে, দেহের সম্ভ্রমটাকে একেবারে
একান্ত আপন ভেবেছিলো
এই যুদ্ধের দেশে যুদ্ধবাজদের কামুক বারুদ স্তুপে
মাতা নয়, জায়া নয়, কন্যা নয়, বন্দিনী ধর্ষিতা শুধু!
এইমাত্র পরিচয়ে বেঁচে থাকার ক্লিন্ন ক্লেদাক্ত জীবন?
যে ধর্মকে আত্মা বলে জেনেছিলো
ধর্মবাজ জেহাদী তাও কেড়ে নিলো।
নষ্ট দেহ, হৃত আত্মা এ কেমন জীবন!
এবার শুধু অবসান!  
তাই ঝাঁপ,  মরণঝাঁপ মাউন্ট সিনজার থেকে!

প্রাচীনা এশিরিয় নগরী নিনেভের কাছাকাছি
পশ্চিম তীরে কলোচ্ছ্বাসিত টাইগ্রিসের নবীনা মোসুুল!
উত্তর ইরাকের ঝকমকে মুক্তো ' আল ফায়েহা ', প্যারাডাইস,
সবুজের উত্তাল তরঙ্গ 'আল খাদ্রা ' মোসুল!
উনিশটি যৌবনবতী ইয়াজিদি যৌনদাসী সেদিন
আই এস আই এস কামুক যুদ্ধবাজদের যৌন সঙ্গিনী হলো না।
কী দুঃসহ আস্পর্ধা! কী ভয়ঙ্কর পরিণতি! কী নির্মম শাস্তি!
সুদৃঢ় লোহার খাঁচায় পুরে আগুনে পোড়ানো
জলজ্যান্ত উনিশটি কুসুমিতা নারীকে নিধন!
হাজারে হাজারে দু 'পেয়ে মানুষ নামধারী দর্শক,
কেউ কিছু বললো না,  কোন প্রতিবাদ হলো না
ভীতির কবলে মোসুলের হাজারো সুসভ্য জনতা
দগ্ধ নারীমাংসের দুর্লভ ঘ্রাণে মুগ্ধ ধীরপায়ে হেঁটে
টাইগ্রিসের কুলকুল কান্নায় ডুব দিয়ে নিনেভের
ধ্বংসস্তুপ সভ্যতা পেরিয়ে হাজারো বছর আগের
আরণ্যক অসভ্যতায় চলে গেলো শুধু।

© সুনীতি দেবনাথ 

কোন মন্তব্য নেই: