( বিজয় কুমার ভট্টাচার্য শিলচরে থাকেন। পেশায় সাংবাদিক, নেশায় কবি। আন্তর্জালে নেই বলে পড়া হয় না, তার কবিতা। এই কবিতাটি ঈশানের পূঞ্জমেঘের আবেগকে প্রকাশ করে বলে এখানে তুলে দিলাম। একাধিক বাংলা কবিতার বই রয়েছে তাঁর । সেই আশির দশকের শুরু থেকে প্রকাশ পাচ্ছে। এই কবিতাটি 'অসংলগ্ন ছিন্ন কথামালা..' বই থেকে নেয়া ।)
চলো না তোমাকে নিয়ে একবার ঘুরে আসি
এসেছে সময়, মনোময়, শুনো দূর
দূরান্তের বাঁশি।
সবাই তো নৌকা বায় ভাটিয়াল স্রোতে—
আমরা উজানে যাবো
গোয়ালপাড়ার গানে গানে,
ঠিকানা হারাবো মাঝপথে।
দূরের পাহাড় বুঝি কামনার নীলাচল
এখনো অভিশাপের মোরগ ডাকে
পাথরের চোখে ঝরে
জল।
কে কোথায় করেছে নির্মাণ, অলৌকিক জলযান,
স্বর্গের সিঁড়ি
তোমাকে নিয়েই যাবো, যেখানে পাগলাদিয়া,
লোহিত, সুবনশিরি।
মেঘে মেঘে মেঘালয়, আবৃত তুষারে
স্নান সেরে নিতে পারো তুমি
বিডন , বিশপ শাওয়ারে।
এখানেই হিমালয় অরণ্যের নানাকথা কয়,
পাইনের বনে ঝড় তোলে জয়ন্তিয়া নারীর প্রণয়।
পাহাড়ের চূঁড়ো ভেঙ্গে দ্যাখো, হেঁটে যাচ্ছে
মিজোরামের যুবতী
হরিণীর মতো ক্ষিপ্রতায়
কী দারুণ গতি!
গির্জাঘরের থেকে ভেসে আসে
মেষ পালকের গান
যিশু বলেছেন, ‘আমিই জীবন ও পুনরুত্থান’
চারপাশে ছড়িয়ে দ্যাখো অসতরাগ
জোরাম নদীর।
সে কোথায় যায়? নাগা ভূমি—ডিমাপুর,
নাকি কোহিমায়?
আমরাও যেতে পারি বহুদূর
দক্ষিণের প্রান্তসীমায়।
অরুণাচলের পথে কী সুন্দর সূর্যোদয় হয়
পলকে দেখতে পারি
খুব বেশি যাবে না সময়।
কতো দূর মণিপুর, চিত্রাঙ্গদা, অর্জুনের দেশ?
তুমি হতে পারো রথের সারথি
তোমাকে মানায় রাজপুরুষের বেশ।
খুব বেশি দূরে নয় সীমা ত্রিপুরার,
গোমাতীর মতো আছে নদী,
আছে রাজবাড়ি আর খিরকিদুয়ার।
রবিঠাকুরের বিসর্জন নাটকের পটভূমি
সেখানে দাঁড়িয়ে তোমাকে দেখতে চাই
কী রকম তুমি!
পাশেই উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা
পাশেই উড়ছে বাংলাদেশের পতাকা
উনিশের মতো একুশের শহিদেরা শুয়ে আছে
স্মৃতিসৌধ ফুলে ফুলে ঢাকা।
তুমিই আমার একান্ত গোপন
অনুভবের কবিতা
যেতে যদি রাজি থাকো
চলো না, অর্পিতা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন