“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

সোমবার, ১০ জুন, ২০১৩

সাগরকন্যা


ক সাগর কন্যার সাথে আজ দেখা। নীল চোখ। লালচে গাল আর সবুজ শাড়ী। নাম তার রাই।

আমি আমার বাসর ঘরে তাকে দেখেছি। আমার প্রথম কৈশোরে তাকে আঁকড়ে ধরেছি বহুবার ভয় পেয়ে।

আমি যৌবনে তার কাছে একটা সকাল চেয়েছি। সারারাতের ক্লান্তি শেষে বাঁশের বেড়া দিয়ে উঁকি মারা সূর্যালোক থেকে তাকে বাঁচাতে কম্বল মুড়ি দিয়েছি তার এলোমেলো সুডৌল পায়ের হলদে রঙে।

'নাইন ও ক্লক' ফুলের কাছে বলেছি আজ তুমি প্রস্ফুটিত হবে না। ওর ঘুম ভেঙ্গে যাবে।
আমি লজ্জাবতি লতাদের বিছিয়ে রেখেছি ওর আসা যাওয়ার পথে। কাঁটা ফুঁটুক, রক্তাক্ত হোক তার পায়ের পাতা, তবু জানবো কোন পথে সে চলেছে রাত্তির শেষে সমুদ্র ফেনায় নিজেকে আহত করতে।
এক পালহীন নৌকোর সাথে সঙ্গম করেছি। একটাই কারন ছিল, তাকে ভাসিয়ে নিয়ে যাওয়া সেই মাঝ সমুদ্রে।

এরপর জগন্নাথ মন্দিরে এসে ধ্বজা উড়িয়ে অনভস্ত পায়ে নেমে আসবো সূর্য মন্দিরের সবচেয়ে উঁচু চূড়া থেকে পুরীর সমুদ্রে। জন্ম সুত্রে আমি শূদ্র নই। আমি ব্রাহ্মণ ও নই। আমি নাম গোত্রহীন এক অকাল সন্তান।

১৯শে শ্রাবনের মাসে বৃষ্টি ছিল বলে আমি আকাশ দেখতে পারিনি। সূর্যের রাগ আমি বুঝিনি।
সমুদ্রকন্যার কাছে তবুও আমি শেষ রাত্তির।

এক সাগর কন্যার সাথে আজ আমার দেখা। যে চেয়েছিল, আজ আমার মৃত্যু হোক, সে আমায় ভাসিয়ে নিয়ে যাবে সমুদ্র সৈকতে। এরপর সিক্ত বসন ছাড়িয়ে, সারারাত সংগ্রহ করবে আমার সফেদ রক্ত।
যা সংরক্ষিত হবে কোন গবেষণাগারে।
এরপর সে মা হবে। এবং ফিরে আসবে পৃথিবীতে অথবা আমার পাহাড়ে।

একটা নতুন ছোট পাহাড়ে অকারনেই পড়বে চাঁদের আলো শেষ রাত্তিরের।

কোন মন্তব্য নেই: