আমার মায়ের বহুদিনের অভ্যেস ছিল কাপড় ধুবার জন্যে সার্ফ ব্যবহার করা। পরে যখন অন্য ডিটারজেন্ট আসতে শুরু করল,তিনি সার্ফ বলা ছাড়েন নি। আমার মা এবং স্ত্রী টুথপেষ্ট দেখলেই বলেন কলগেট। তা সে আমার প্রিয় ব্রাণ্ড ডাবর লাল দন্তমঞ্জনকেও। এবারে দেখুন অসমের একটি ছোট কাগজে ই-মেইল না লিখে লেখা হয়েছে ফেসবুক। এটা হাসির বিষয় নয়। এটি ফেসবুকের জনপ্রিয়তা বোঝায় বটে। কিন্তু আমরা যারা চাই অসমের বাংলা সাহিত্য- সংস্কৃতি, বাঙালি বৌদ্ধিক চর্চা একটা মুক্ত আকাশ হাতে পাক তখন ইন্টারনেট আমাদের প্রবল সুযোগ এনে দিয়েছে। একে আমরা অন্তত জাষ্ট ফ্যাশন স্টেটমেন্ট হিসেবে নিতে পারিনা। আর কেবল মাত্র ক'টি লাইকের (Like) মোহে ফেসবুক পাগল হয়ে থাকতে পারি না। কেননা মনে রাখবেন ফেসবুক আপনার রাজধানী এক্সপ্রেস হতে পারে, বাসাবাড়ি নয়। এখানে পাঁচদিন পরেও আপনার কোনো লেখা টিকে থাকে না, থাকলেও খোঁজ মেলে না। আমাদের সন্ধান করা উচিত কোথায় আমাদের লেখা সংরক্ষিত থাকে। আর যখন তখন যাকে তাকে সেগুলো পড়ানো যায়, বা সেগুলোকে ভবিষ্যতের কোনো প্রসঙ্গে ব্যবহার করা যায়। আমার মতে সে জায়গা ব্লগ, ওয়েবসাইট। আর তার জন্যে আমাদের মেইলের ব্যবহার থেকে শুরু করে আরো বহু কিছু শিখে নিতে হবে। ভাবুনতো, যদি আজ শতদলের (আচার্য) মনিষা-১ পড়তে চাই, তবে কোথায় পাই? ইন্টারনেটের নিজের এক বিশাল সৃষ্টিশীল জায়গা আছে , সেগুলো আমাদের জানতে হবে জানাতে হবে। যেমন মনোবৃত্তি নিয়ে এগুচ্ছেন আমাদের বাংলাদেশের বন্ধুরা কিম্বা অসমিয়া বন্ধুরা! উপরের ছবিতে ফেসবুক কেবল 'অজ্ঞতা' মাত্র নয়, একটা ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। মানে ওরা মেইলের ব্যবহারটুকুও জানেন না। কিন্তু দেখাতে চাইছেন, ওদেরও সেরকম অত্যাধুনিক ব্যাপার একটা রয়েছে! না জানা অপরাধ নয়। কিন্তু জানার অনিচ্ছে, আমাদের পথের সামনে বিশাল পাহাড় বসিয়ে রেখেছে। এ আমাদের বৌদ্ধিক জড়তার নিদর্শন মাত্র। এভাবেই কি পিছিয়ে থাকব আমরা?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন