“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০১৩

এখনই ভাঙতে হবে ঘুম

।। সঞ্জীব দাস।।
(c) মেঘ অদিতি
মাদের ভারতবর্ষ গনতান্ত্রিক।যেখানে সকলের অধিকার সমান। তাই সকলের উচিত সবাইকে সম্মান করা। কিন্ত্ত ভারতবর্ষ যেন অন্যরকম। এক অদ্ভুত আঁধার যেন গোটা দেশ টাকে গ্রাস করে নিয়েছে।শুধুই দেখা যায় চারিদিকে দৈত্যমানব। যাদের আকৃতি মানুষের মতোই কিন্ত্ত ব্যবহার দৈত্য-দানবের মতো। তারা যে মানুষ নয়  মানব শব্দটা তাদের জন্য নয়।শুধু আকৃতিটাই মানুষের মতো।কিন্ত্ত মানবতা তাদের মধ্যে নেই লুপ্ত হয়ে গেছে। তারা শুধু নিজের লালসা পূরণ করতে জানে। এক লালসাগ্রস্থ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে গোটা দেশটির দিকে। যার জন্য আমাদের দেশের জনসাধারণ বিশেষ করে নারীরা নিজেদের দেশকে গনতান্ত্রিক ভারতবর্ষ বলে ভাবতে পারছে না। বাড়ির বাইরের রাস্তাটাকেও তারা বিদেশ ভাবছে। জানা নেই কখন কী ঘটবে! স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে পারছে না। আর তাদের রাস্তাঘাটে শুধু অপমানিত হতে হচ্ছে। কিছু পুরুষ যারা আসলেতে পুরুষ নয়, তারা নিজের ক্ষমতা দেখাবার জন্য অবমানবিক কাজ করে তা মোটেই পুরুষের কাজ নয়।তারা ভুলে গেছে যে তারা যাদের পথেঘাটে অপমানিত করছে তারা স্ত্রীজাতি ।আমরা যে বিদ্যাকে যোগ্যতার মাপকাঠি ভাবি সেই বিদ্যার দেবী ও একজন মহিলা।ভারতবর্ষে যুদ্ধ - আন্দোলন চলাকালীন দেশে শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করেছিলেন তিনিও একজন মহিলা যাকে আমরা মা বলি। নবেল জয়ী মাদার টেরেসা।যে স্ত্রীজাতিকে তারা অপমান করছে আমাদের মা বোন সেই স্ত্রীজাতিরই একজন। মা আমাদের জন্মদাতা স্ত্রীজাতির অপমান মানে আমাদের মা বোনকে অপমান করা।যারা স্ত্রীজাতির উপর নিজের পৌরুষত্ব শক্তি দেখাচ্ছে, যে অবমানবিক, জঘন্য, নরপিশাচের  কাজ করছে তারা তাদের মা বোনকেই অপমানিত করছে জানি না তাদের মানবিকতা কোথায় লোপ পেয়েছে।তারা এত ভয়ঙ্কর নরপিশাচ কীভাবে হয়ে উঠেছে! যে শিশুর হাঁসি দেখলে আমরা সমস্ত গ্লানি, দুঃখ, কষ্ট ভুলে যাই তারা সেই শিশুদেরকেও ছাড়েনি। তাদের সততা, অবোঝ মনের সুযোগ নিয়ে তাদের উপরও  নিজের লালসা, অবমানবিক বাসনা পূর্ণ করছে। আমরা যে শিশুর মুখে সবসময় হাঁসি দেখতে চাই , সবসময় খুশি রাখতে চাই তাদের সাথেও এরকম কীভাবে করতে পারে! তাদের সত্‍ , অবাঝ মনের সাথে এরূপ কী করে করতে পারে! তাদেরকে মানুষ ত দূরের কথা পশুদের সাথে তুলনা করা ভুল হবে। তারা এক মানবরূপী দৈত্য-দানব।কিন্ত্ত আমরা বাকি জনসাধারণ যেন ঘুমন্ত অবস্থায়। হঠাত্‍ নিদ্রাভঙ্গ হলে কিছুক্ষণের জন্য মানবতা জাগে কিন্ত্ত কিছুদিন পর সেই মানবতা আবার ঘুমিয়ে পরে।কিছুতেই এই মানবতাকে জাগিয়ে রাখতে পারছে না হঠাত্‍ হঠাত্‍ মানবতা জেগে উঠে কিন্ত্ত তা ক্ষণস্থায়ী।এই দেশে যে অন্ধকার নেমে এসেছে তা কিছুতেই দূর করতে পারছে না।তাই রোজ রোজ নারীদের রাস্তাঘাটে, সরকারি দপ্তরে, স্কুলে, কলেজে যাতায়াত করতে সবক্ষাণেই অপমানিত হতে হচ্ছে। কারণ তাদের কাছে তেমন শক্তি নেই যে এই শক্তিশালী নরপিশাচের সাথে লড়াই করবে। আর তাদের মধ্যে মুষ্টিমেয় কয়েকজন যদি লড়াই করে তাদেরও অনেক দূর পর্যন্ত একাই লড়াই করতে হচ্ছে আর তখনও তাদের অপমানিত হতে হচ্ছে কিন্ত্ত তবুও তারা হার না মেনে বার বার অপমানিত হয়েও লড়াই করে যাচ্ছে।এখনও লড়াই করে যাচ্ছে। তাদের আর লড়াই করার শেষ নেই।কিন্ত্ত এই এত বড় লড়াইর মধ্যে প্রায় অনেকে এখনও ঘুমিয়ে। তাদের যেন নিদ্রা ভাঙছে না।কবে ভাঙবে তারও ঠিক নেই। কিন্ত্ত শীঘ্রই ভাঙতে হবে।এখনই ভাঙতে হবে। নইলে যে এই গোটা দেশটাকেই যে ওই নরপিশাচরা গ্রাস করে নেবে।

কোন মন্তব্য নেই: