“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ২৫ জুন, ২০২৩

আমি মণিপুর বলছি .........

।। এ এফ ইকবাল।।

(C)Image:ছবি












বুলেট-ঝাঁঝরা শহরের  
একটি খোলা ক্লাব থেকে   
আমি মণিপুর থেকে বলছি।   

আমার প্রিয় দেশবাসী-  
যদি শুনতে পাও  
আমার বেদনার আওয়াজ   
শোনাই তাহলে তোমাকে   
আমার কাতরানোর সুর   
যদি দেখতে পাও-  
দেখাতে চাই আমার জ্বলন্ত হৃদয়খানা ! 

আমার উঠোনে একদা  
কিচিরমিচির করত যে পাখিগুলো 
বন্দুক আর গুলির শব্দে 
আজ তারা ছুটোছুটি করছে  
দিকভ্রান্ত হয়ে এখানে ওখানে !  

শিশুদের খেলার ময়দানে আজ  
সকাল সন্ধ্যায় প্রতিধ্বনিত  
শুধু সৈনিকের রণরণি ! 
থাকতো যারা একত্রে ক্রীড়ামত্ত      
তারাই হয়ে উঠেছে কেমন হিংস্র 
পরস্পরের রক্ত ​​পিপাসু ! 

সময় হবে তোমাদের ? 
দেখে যেতে আমার চৈতন্যের ময়দান   
যেখানে চলছে আজ  
রাজনীতির কোন কৌশলী খেলা   
ভাইয়ে ভাইয়ে লড়িয়ে    
নির্মাণ হচ্ছে এ কোন উত্থানের সিঁড়ি- 
দেখে যাও মোর প্রিয় দেশবাসী।  

হ্যাঁ, আমি মণিপুর বলছি,  
এ কোন দূর্ভোগ দেখতে হচ্ছে 
প্রতিদিন প্রতিনিয়ত আমাকে   
শত শত নিরীহ মানুষকে 
মরতে দেখছি চোখের সামনে 
কেমন দূ্র্ভাগা আমি-  
কেন আমায় দেখতে হচ্ছে 
এই অন্ধকারে ছেয়ে যাওয়া কালকুঠুরি?  

আমারই সামনে পুড়ছে হাজারো  ঘরবাড়ি 
মরতে দেখছি কত দুর্ভাগা পথচারী  
মাতৃজাতি শিশু কিশোরের 
দেখব কত আর পালানোর দৃশ্য  
পথঘাটে পড়ে থাকা কত মরদেহ আর ! 
মোর প্রিয় দেশবাসী- 
দেখে যাও বারেক এসে 
আমার এই বিভীষিকাময় পরিদৃশ্য !  

জানিনা কার কাছে  
কোথায় গিয়ে বলবো  
আমার এই বেদনার গল্প    
কে শুনবে আমার মরণ যন্ত্রনার কথা   রাজনীতির আগুনে পুড়ছি নিত্য আমি  
ফুটন্ত তেলের কড়াইয়ে  
হচ্ছে আমাদের চিংড়ি ভাজা-   
প্রিয় দেশবাসী  
আমি মণিপুর বলছি 
আমি মণিপুর ডাকছি 
দেখে যাও আমার ঝলসানো বদন !  
                    © ইকবাল॥ 
                 হাফলং। ডিমা হাসাও।
                   ২৫-০৬-২০২৩।

কোন মন্তব্য নেই: