সপ্তর্ষি বিশ্বাস
প্রথম গুচ্ছ
১।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
ব্যবসায়
বাবার উপার্জন ভালো তাই কলেজে গেছি, বি.এ পাশ করতে পারছি।
অনার্স্
না থাকলেও আমার ‘স্পেশাল বেঙ্গ্লী’ আছিল।
ব্যবসায়
বাবার উপার্জন ভালো ঐ কারনেই বেকারত্বের দুশ্চিন্তা নাই মনে।
এখনো বিয়া
শাদি করিনাই। দিন কাটাই পথে পথে ঘুইরা। বিড়ি সিগারেট টাইন্না।
স্কুটার
চালাইয়া শহরে যাই, আড্ডা দেই আর চেষ্টাকরি কবিতা লেখবার।
আমি জানি
আমার লেখাগুলি ঠিক কবিদের মতন হয়না। তবু লিখি।
২।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
আমি বিশু-বংকু’র
ফিলিম ফেস্টিভেলঅ গদারের সিনেমা দেখছি। গোর্কীর ‘পৃথিবীর পাঠশালা’
পড়ছি। পড়ছি
ভস্তকের ছাপা ‘আনা কারেনিনা’। আমি কালী সিংগী’র ‘মহাভারত’ও
পড়ছি। আমি
‘এশ্টাব্লিশমেন্ট্’ জানি। জানি ‘এন্টি-এশ্টাব্লিশমেন্ট্’ও। তথাপি শহরের
আড্ডায় আমি পাত্তা পাইনা। পাত্তা পায় পশ্চিম বাংলার
কোন্ অজ গ্রাম থেইক্যা
ওষুধ ফেরী
করতে আসা রবি মুখার্জী কারন সে ছাপা বাংলায় কথা কয় আর কথায়
কথায় কপ্চায়
‘আমাদের কোলকাতা’ ‘আমাদের কোফি হাউস্’ ...
আরে, ‘বালুরঘাট’
আর ‘ব্যান্ডেল’ কি কইলকাতা, করিমগঞ্জো কি শহর, তেলচুরা কি পাখী?
কইলকাত্তায়
জন্মাইলেই কি কবি আর বুদ্ধিজীবির রেশন কার্ড পাওয়া যায়?
শালারা বোঝেনা।
৩।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
আমি খুকন
ডাক্তরের মেয়ে মীনারে ভালপাই। খুকন ডাক্তর নামেই ডাক্তর।
আসলে কম্পাউন্ডার।
আমি সেইদিন
মীনারে একখানা চিঠি দিস্লাম। তাতে আমার মনের কথার সঙ্গে আমার পছন্দের
একটা কবিতাও
দিছ্লাম টুইক্কাঃ ‘ একটি পণের দ্বিধা থরথর চূড়ে ভর করেছিল সাতটি
অমরাবতী...একটি
নিমেষ দাঁড়ালো সরণী জুড়ে থামিল কালের চির চঞ্চল গতি...’ মীনা
পইড়া ফিরৎ
দিলো আমার চিঠি। বুঝলাম যা বুঝবার।
কয়দিন পরে
নিমাই দারোগার মেজো পুলায় আমারে পড়াইল এক চিঠি। মীনায় লেখছে তারে।
লেখছেঃ
‘ তু হ্যাঁ কর্ ইয়া না কর্ তু হে মেরী জীবন’...
তখন বুঝলাম
মীনাও করিমগঞ্জোর ঐ বিশু-বংকু’র ই মতন।
মীনারা বোঝেনা।
৪।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
আমার বাড়ির
সামনেটা পুব দিক। পিছনটা পশ্চিম। আমি আমার জান্লা দিয়া
চাইয়া সূর্যোদয়
দেখি প্রতিদিন, সইন্ধ্যা দেখি পিছনের পুকুর পারে বইয়া।
দেখি, প্রত্যহই
দেখি। কেউরে কিছু কই না। চুপ কইরা দেখি। আর দেখতে দেখতে
প্রত্যহই
আমার শরীর কেমন করে, মন কেমন করে...
আমি আরো
অনেক অনেক দিন সূর্যের এই উঠা আর অস্ত যাওয়া এইভাবেই চাইয়া চাইয়া
দেখতে চাই...
৫।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
গতকাল বিকালে
আমি আমারে বদল কইরা লইলাম আমার জান্লার
কিনারের
ঐ সপ্রী গাছটার সঙ্গে।
সঙ্গে সঙ্গে
আমি রোগা হইয়া গেলাম। আমার বয়স বাড়লো। গজাইলো ডালপালা।
সবুজ পাতায়
ভইরা গেলো আমার গা। আমার ডালে উইরা আইলো কতগুলি পাখি।
তাদের কিচির
মিচিরের মধ্যে ঘুমাইয়া পড়তে পড়তে আমি সত্যই ভুইল্লা গেলাম, যে,আমি শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র
সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
২৮/০৯/২০১০
কার্তিক
চন্দ্র সাহা'র কবিতা
দ্বিতীয় গুচ্ছ
১।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
ব্যবসায়
বাবার আমদানী ভালো তাই কলেজে গেছি, বি.এ পাশ করতে পারছি।
বেকারত্বের
দুশ্চিন্তাও নাই মনে। এখনো বিয়া শাদি করিনাই। দিন কাটাই
পথে পথে
ঘুইরা। আড্ডা দিয়া আর বিড়ি সিগারেট টাইন্যা।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। একেকদিন ভাবি যাই গিয়া। যাই গিয়া
এই ঘরবাড়ি
ছাইড়া, এই গ্রামগঞ্জ ছাইড়া। যাইগিয়া এই বাজার, শ্মশান, হাসপাতাল,
কবরিস্থান
সব পার হইয়া। যাই গিয়া 'নিরুদ্দেশ' হইয়া। কিন্তু আমি জানিনা 'নিরুদ্দেশ'
ঠিক কুন
দেশ তবে আমি জানি আমি নিরুদ্দেশ হইলে আমার মা'বাপের কষ্ট হইব। বড়দা,
মেজদারো
হইব। বৌদির হইব। ছুট বইনটা আমার ন্যাওটা। তার কষ্ট বেশী হইব।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। আমি জানি আমার লেইগ্যা আটকাইয়া থাকতোনা কিচ্ছুই তবু।
কান্দাকাটি,
থানাপুলিশ, বেশ কয়দিন বাবা-দাদার দুকা-কাদান বন্ধ। পাড়া পড়শী'র
মস্তি। দুকানে
বাজারে আলাপ সালাপ। কিচ্ছা কেলেংকারির খুজ-খবর। মা, বইন, বৌদিরার
খাওয়া দাওয়া
নাই। সান্পানি নাই ...
তারপরে আবার
একদিন দুকান খুলব। বাবার বয়েস এক ধেক্কায় বাইড়া যাইব অনেক। হয়তো
বাবার সব
চুলঅই পাইক্কা যাইব। দাদারা বাবারে কইব 'তুমার আর দুকানো গিয়া কাম নাই।
আমরাঅই দেখমু
দুকান'। বাবায় অ মাইন্যা লইব।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার। আমি
আত্কা একদিন
'নিরুদ্দেশ' হইবার বছর খানেক ঘুইয়া গেলে একদিন ছুট বইনটার
বিয়ার আলাপ
আইব। 'ভাই নিরুদ্দেশ' লইয়া প্রশ্ন উঠলে দাদারা টেকা পয়সা'র কথা তুইল্লা
কথা ঘুরাইব
কারন পাত্র ভালা। বইনের বিয়া অইব। কাচ্চা বাচ্চা অইব। ভাইগ্না ভাইগ্নির
অন্নপ্রাশনের
লেইগ্যা সব আইব আমরার বাসাত - যে বাসার জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস
ফকিরাবাজার।
যে বাসার ছুট ছেলের নাম আসিল শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা।
#
অন্নপ্রাশনের
দিন তিন গ্রামের পাব্লিক আইব ভিড় কইরা। 'বাপ্পি কেটারিং' এর বাপ্পী'র কপাল খুলব
আর দুফরে,
যখনঅইফাক পাইব, মা'য় খালি আইয়া দাড়াইব অই জানলাটাত, যেটার সামনে
ঠাকুরদাদার
আমলের সপ্রিগাস, যেটাত থেইক্যা দেখাযায় পাক্কা রাস্তা।
রাস্তাত
কুনো একলা মানুষরে ইদিকে আউগ্যাইয়া আইতাসে দেখলেঅই মার বুক
কাইপ্যা
উঠব। মা'র মনোহইব ই বাড়িত আরেকজন মানুষও আছিল যার নাম
শ্রী কার্ত্তিক
চন্দ্র সাহা। যার জেলা করিমগঞ্জ, পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার। যে হয়ত আর ই বাড়িত
কুনুদিন
ফিরা আইত না।
কিন্তু কেনে?
মায় বুঝতোনা কুনুদিন। বইনে বুঝিত না। আর আমি শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা।
জেলা করিমগঞ্জ।
পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
আমি নিজেঅই
বুঝমু নি?
বুচ্ছিনি
কিচ্ছু
কুনুদিন?
৩।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার একেকদিন ভাবি
যাই গিয়া।
যাই গিয়া এই ঘরবাড়ি ছাইড়া, এই গ্রাম গঞ্জ ছাইড়া। যাইগিয়া এই বাজার, শ্মশান, হাসপাতাল,
কবরিস্থান সব পার হইয়া। যাই গিয়া 'নিরুদ্দেশ' হইয়া।
কিন্তু আমি
জানিনা 'নিরুদ্দেশ' ঠিক কুন দেশ তবে আমি জানি দিনের বেলা যাওন যাইত না।
ছুটো জেগাত
সবে সবরে চিনে। বাসো-গাড়িত উঠলে চিনা মাইনষের হাজার সওয়াল। 'কিউওরিসিটি'।
'কই যাও',
'কেনে যাও', 'কবে আইবায়'... ফলে আমি দিনো না, রাত্রে, ই ঘরবাড়ি ছাইড়া, গ্রাম গঞ্জ ছাইড়া,বাজার,
শ্মশান, হাসপাতাল, কবরিস্থান পার হইয়া বাইরইয়া যাইমু।
বাইরইয়া
যাইমু হাটতে হাটতে। হাটতে হাটতে হাটতে হাটতে
যেখানো সকাল হইব
হি খানোই
চা-বিস্কুট খাইমু, যে দুকান পয়লা খুলব অই দুকানো বইয়া। তারপরে আবার
হাটা দিমু
। দুফর হইলে শস্তা দেইখ্যা হুটেলের ভাত। গাছের তলে নাইলে মিনিসেপালটি
অফিসের বারিন্দাত
ঘুম আর রাইতভর খালি হাটা...
কিন্তু কেনে?
কিজানি। বুঝিনা। বুচ্ছিনা। মনোহয় কুনুদিন বুঝতামও না। তেও আমি হাটমু।
খালি হাটমু।
হাটতে হাটতে
আমার চুল লম্বা অইব, দাড়ি লম্বা অইব, হাতের, পাউএর নউখ লম্বা হইব।
হাটতে হাটতে
হাটতে হাটতে পকেটের পয়সাকড়িও ফুরাইব আস্তে আস্তে।
তারপরে একদিন
আমি আর হাটতাম না। আমি রাস্তার সবচেয়ে কাছের জঙ্গলো ঢুইক্যা
পছন্দমতো
একটা গাছের কিনারো দুই হাত মেইল্যা দাড়াইমু গাছের মতন। আর
তারপরে,
আস্তে আস্তে, দিনে, রাইতে, দুফরে, বিকালে,রইদে, বিষ্টি এ, ঝড় এ,তুফানে আমার শরীর অ
গজাইব শক্ত বাকল। আমার হাতে পায়ে হইব পাতা আর ফুলের সংসার। আমার ডালো আইয়া বইব, জিরাইব
হাজার কিসমের কাকপক্ষী আর একেকদিন হই পাখিটাও আইব ...
আইব, আইয়া
বইয়া, জিরাইয়া আবার যাইব গিয়া উইড়া অই পাখিটাও
যেটার জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার আর যেটা থাকে
অই সপড়িগাসো যে বাসার
ছুটো ছেলের
নাম আসিল শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। যে মনে মনে একবার অই সপরিগাসটা হইসিল ...
৪।
আমি শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার। 'নিরুদ্দেশ' হইবার কথা
চিন্তা করতে
করতে শেষ পইরযন্ত এক রাত্রে বাড়ির সবে ঘুমাইলে আমি বাড়িত থেইক্যা বাইর হইয়া আইলাম।
ঘড়ির নিয়মে রাতি তেমন সাংঘাতিক না হইলেও গঞ্জের নিয়মে তখন মইধ্য রাইত।
রাইত নিঝ্ঝুম।
রাইত দুপ্ফর বেলা, ভূতে মারে ঢেলা।
আমরার ভিটা
তিন পুরুষের। পুরান বাড়ির চাইর দিকে গাসগাসালি, ঝুপঝাড়। ঝিঝিপুকার ডাক
বাইচ্চারার নামতা পড়ার মতো। পায়ের তলে ভিজা ঘাস।
বাশপাতা। ইতা সবপাতার শব্দ দিয়া
বানানি আমার ছুটোবেলা, আমার ইস্কুল-কলেজ। আমার এক
তরফা প্রেম-ভালবাসা,আমার
পুরাটা অতীত।
'পাস্ট লাইফ'।
তারারে পার
অইয়া আমি ‘হাটমেন্ট গলী’ ধরলাম। ভুক্কুরের কচুক্ষেত ছাড়াইয়া, সরল খাঁ'র দিঘির পচ্ছিম
দিকে যখন সরল খা'র কবরের সামনে আইলাম তখন আত্কা আমার মনো হইল আমি য্যান্
এক রাজা-বাদশা।
যুদ্ধত হাইরা ভাগতাসি, পলাইতাসি - একলা, অন্ধকারো। সিরাজদুল্লার মতন আমার গা'অ ছিড়া
পুশাক, 'ছদ্মবেশ'। কিন্তু পাউও হেই রাজা-বাদশার চক্মকি জুতা। টের পাইলাম
আমার পাউ
অ লাইগ্যা জাইগ্যা উঠতাছে ভিজা সব ঘাস, বাশপাতা আর আমারে জিগাইতাসে
'কি দুষ করলাম আমরা, আমরারে ছাইড়া তুমি কই চল্লায়,
রাজা? বাজি রাইখ্যা দাবা খেইল্যা হারবার পরে এই গঞ্জ সরল খা'য় ও চুক্তি মতো লেইখ্যা
দিলাইসলা। কিন্তু গেসইন না তাইন, কুনু দিন ,
কুনুখানো
ই জেগা ছাইড়া।
অই দেখো
কবর খুইল্যা উইঠ্যা বইসইন তাইন। রুজ রাত্রে কবর খুইল্যা উইঠ্যা বইন তাইন।
তানরে পার
হইয়া তুমি কেমনে যাইবায়, পারবায় নি যাইতায়"?
হায় সরল
খাঁ, হায় তুমার জার্মানি ফেনায় ডুবা দিঘি, হায় ভুক্কুর আর তার কচু খেত, হায় আমার তিন
পুরুষের
ভিটা, আমার সপরি গাস্, … হায়, আমি শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট
অফিস ফকিরাবাজার।
আমার আর
নিরুদ্দেশ হওয়া হইল না।
৫।
পাঠক ভাই,
পাঠক দাদা,কাকা,মামা...
পাঠিকা বইন,দিদি,
বৌদি, কাকিমা, মাসিমা, দিদা ...
কাগজে কলমে
আমি শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা। জেলা করিমগঞ্জ। পোষ্ট অফিস ফকিরাবাজার।
কিন্তু আমি
আসলে কে? না, আমি বুড়া সপড়িগাস্ না, আমি আসল শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা'র মতন
মুখচুরা
না। আমি আসলে এক তুখোড় মাল। বিশু-বংকু-রবি মুখুজ্জেরা আমারে ডরায় রীতিমতো।
আমি খালি
কথা কইয়া ই রকম বউত গান্ডুর ফেন্ট খুলিদিতে পারি, দিসিও। কইলকাত্তার
অনেক পন্ডিতো
আমারে সামনে দেখলে খাপ খুলতে সাহস করেনা। যে
কুনু আড্ডাত আমি দুই মিনিটে মধ্যমণি হই যাইতাম পারি। খুকন কম্পাউন্ডারের মেয়ে 'মীনা','সুনা','শেফালী','গীতালি',
'চৈতালী'রারে আমি ঘন্টা দিয়াও পুসিনা আর প্রেমপত্র দেওয়া ত অনেক দূরের কথা। আমার প্রেমিকা
শহরের 'ভাসসিটি'ত যাওয়া মেয়ে। লগে আরো দুই চাইরটা ডাক্তরি-ইঞ্জিনীয়ারিং এর মাইয়ারেও
নাচাইয়া খাই। আমি সেই মাল। কাজেঅই কাগজে কলমে যেতাঅই লেখি আর ছাপাই, রাইত-জাগা সরল
খাঁ'র ভূত আমারে পারবনি আটকাইয়া রাখত কুনু
গঞ্জো, মফস্বলো? 'নগর' রে 'নাগর' বানাইয়া আমি ত' তার কাছে বান্ধা মেয়েসেলে হইমুই আর
হইসিও। আমার 'ইগো' আমার অদৃশ্য উষ্ণীষ, আমার 'নীল রক্ত' আমার দৃশ্যাতীত আংরাখা ।
তে'ও কাগজে
কলমে আমি যে লেখি শ্রী কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা'র কথা, তার কারন আমার 'আর্বান সেন্স অফ
গিল্ট্', সুজা কথায় যাত্রার বিবেক। আসল কিন্তু আসলে নকল। ফলে গো পাঠক, গো পাঠিকা, অন্তিমে সবঅই হইলো অক্ষরের
খেলা।
শ্রী কার্ত্তিক
চন্দ্র সাহা'দের লেইখ্যা, গইড়া কিংবা পইড়া তারপরে চায়ের কাপে তুফান তুলিল্যা, আরো দুই
পেগের পরে কাইন্দা কাইট্যা ভগ্লামিই করতাম পারি।
আমরা শ্রী
কার্ত্তিক চন্দ্র সাহা কোনোদিনই হইতে পারিনা। পারতাম না।
২ – ১২ /০২/২০২১
বেঙ্গালোর
[ শ্রী কার্তিক চন্দ্র সাহা আমাকে দেখা দিয়েছিল ১০
বছর আগে। তখন তার কিছুটা দেখেছিলাম। লিখেও রেখেছিলাম। বাংলাদেশ্র কোনো একটা ওয়েব-ম্যাগে
প্রচারিতও হয়েছিল সে। তবু প্রায় সেই সময়েই প্রকাশিত আমার গ্রন্থে শ্রী কার্তিক চন্দ্র সাহা'কে আমি জাহির করিনি কেননা
জানতাম তার সঙ্গে আমার অন্ততঃ আরো একটি সাক্ষাৎ বাকী আছে। এই সাক্ষাৎটি কে ত্বরাণ্বিত
করলো প্রবুদ্ধদা'র এই হঠাৎই শ্রী কার্তিক
চন্দ্র সাহা' কে তুলে আনা। শ্রী কার্তিক চন্দ্র
সাহা আবারো এলো ...অন্ততঃ আরেকবার তো এলো। দেখাযাক পরে আবার কখনো আসে কিনা ...]
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন