“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২১

জুনাইদের পিতা


।। মিফতাহ উদ্দিন ।।
 
(C)Image:ছবি


 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
 
গীতা পড়া হয়নি তবে সীতার জানি রাম
বলতে পারি ভালোই আমি চারটে বেদের নাম।

দুগগা, কালি কৃষ্ণ জানি, জানি শিব সবার
গরু, হাতি, সাপ, পেঁচা ও দেখি দিনে ক-বার!
 
দেখলে মিছিল ভগবানের রাস্তা ছাড়ি আগে
জানিনে খুশ হয় কি না সে আমার এমন ত্যাগে!

মত যত ঠিক পথ ততো ভাই গেছেন বলে কেউ
বারো মাসে পর্ব তেরোর তাইতো দেখি ঢেউ!

বন্ধু, তোমার নিজের পুঁথি একটু নাহয় পড়ো;
সাক্ষ্য দেবে সর্ব-শ্লোকই — মানুষ সবার বড়।

বৃক্ষ চিনি ফলেই কেবল, ফুলের সুবাস যেমন;
তোমার মাঝেই খুঁজব আমি তোমার বেদ কেমন।

কেমন ছিলেন ঋষি তোমার, হয়নি আমার পড়া;
কিন্তু জেনো— বক্ষজুড়ে ওদের আসন গড়া।

এই তো সেদিন— কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণ দিলেন ভাষণ,
শীর্ষচূড়ায় জেনে রেখো সময়েরই আসন।

কী বলেছেন যুদ্ধের আগে? মানুষ-মানুষ কী ভেদ?
'অদ্য থেকে বন্ধ, জেনো, ছোট বড়'র বিভেদ।

অজ্যেষ্ঠাসো অকনিষ্ঠাসঃ ভাই ভাই সকলে
শুনিয়াছি ঋগ্বেদের শ্লোকটি তাহাই বলে! 

সংখ্যালঘুর সঙ্গে তুমি করবে যখন যা-ই,
ভাবব আমি— তোমার বেদের শিক্ষা ছিল তা-ই।

কেমন ছিল কর্ম রামের? কেমন বিচার তাঁর ?
তোমার মাপেই মাপব আমি— রামের অবতার।

হয়নি যাওয়া কাশী আমার, যাইনি বৃন্দাবন 
সবার সেরা তীর্থ জানি মানুষেরই মন।

সেই মানুষের মন কে ছেড়ে নামটা ধরে তার
জয় শ্রীরামের নামে চলে কেমন অত্যাচার!

ফ্রীজে রাখা মাংসতে হয় কার গো অপমান
কোন দেবতার আদেশে ভাই নাও তুমি তার জান!

ওপার থেকে একটা দুটো— আসলে খবর উড়ে;
অমনি তুমি প্রতিবাদি এপারে সব ছুড়ে।

রাখবে ক-জন ক-দিন খবর, থাকবে দু-দিন রেশ;
এপারে যে রোজ যে কত হচ্ছে নিরুদ্দেশ  !

তোমার হাতেই ধর্ম তোমার, তোমার বেদ গীতা  ;
গেলাম আমি আরজ রেখে— জুনাইদের পিতা!

২৪ অক্টোবর ২০২১
মোবারকপুর

1 টি মন্তব্য:

আ, ফ, ম, ইকবাল। বলেছেন...

হৃদয়স্পর্শী ! দ্বিতীয়বারের জন্য এদেশে কোনো পিতাকে এই জিজ্ঞাসা আর করতে না হয় !