“...ঝড়ের মুকুট পরে ত্রিশূণ্যে দাঁড়িয়ে আছে, দেখো ,স্বাধীন দেশের এক পরাধীন কবি,---তার পায়ের তলায় নেই মাটি হাতে কিছু প্রত্ন শষ্য, নাভিমূলে মহাবোধী অরণ্যের বীজ...তাকে একটু মাটি দাও, হে স্বদেশ, হে মানুষ, হে ন্যাস্ত –শাসন!—সামান্য মাটির ছোঁয়া পেলে তারও হাতে ধরা দিত অনন্ত সময়; হেমশষ্যের প্রাচীর ছুঁয়ে জ্বলে উঠত নভোনীল ফুলের মশাল!” ০কবি ঊর্ধ্বেন্দু দাশ ০

রবিবার, ২৫ মে, ২০১৪

মিনির হাসি

                 (গল্পটি এখানে এই বাংলা লাইব্রেরি ফোরামেও আছে।)                                                                                                                                                                 
           ।।  রণবীর পুরকায়স্থ ।।

   মার সাগর দেখার কৌতূহলেও মিনি হেসেছিল। ও খুব জোরে হাসে না। মিনির হাসির কোনো শব্দ নেই।      মিনি সবসময় মুখেও হাসে না,- ওর চোখের মনি দুটো শুধু এপাশ ওপাশ করে। কখনও একটা ঠোঁট ভাঙে, কখনও  কখনও দুটোতে চাপ দেয় শক্ত করে, কখনও  নিচেরটাকে ওপরে উঠিয়ে আলতো চেপে রাখে। এরকম অনেক নীরব ভঙ্গি  আছে ওর হাসির। মিনির চৌকো ফ্রেমটাও ওর চোখ দুটোকে আরো রহস্যময়ী করে তোলে। মিনির রহস্যময়ীতা আমাকে বিব্রত করে।
(C)Image:ছবি
         

            আমরা শেষপর্যন্ত  সাগর পারেই বেড়াতে এলাম। কেয়ারটেকারের হাত থেকে চাবিটা নিয়ে আমি মিনিকে শুনিয়ে শুনিয়েই নম্বরটা বললাম। দুশো বারো । মিনি শুনল এবং আমার হাতের দিকে তাকিয়ে হাসলো । আমি ওর মুখের দিকে তাকিয়ে নম্বরটা আবার ভাল করে দেখলাম । দুশো বারোইতো ! চাবির রিংটা অবশ্য খুব মজার । গোল মতো একটা টিনের পাতে ফুটো করে চাবিটা লাগানো । ঠিক গোলও নয় ডিমের আকারের একটু লম্বাটে পাতটায় দুশো বারো সংখ্যাটাই খোদাই করা । ঘরের নম্বরই হবে । তবে কি চাবির রিং এর অভিনবত্বেই মিনি হাসলো ? আমি চাবিটাকে শক্ত করে হাতের মুঠোয় ধরে রাখলাম ।

           মিনি আমাকে কোন ব্যাপারেই তাড়া দেয় না । - আমার উপর নির্ভর করতে চায় মিনি । এখনও, আমার এত ভুলের জন্যে তাড়া দিল না । ঝড়বৃষ্টি বাঁচিয়ে সিঁড়ির নিচে মালপত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি দুজনে । চৌকিদারকেও একটু সাহায্যের জন্য বলতে ভুলে গেছি । বিপদের সময় এরম ভুল আমার হয়ই । প্রচণ্ড সামুদ্রিক ঝড় চলেছে চতুর্দিকে ,- শহরে ঘুরঘুট্টি অন্ধকার,- ডি ভি সির পাওয়ার সাপ্লাইও বন্ধ। অন্ধকার আর ঝড়বৃষ্টির শব্দে চলন্ত বাসে বসে মনে হয়েছিল আমাদের দুপাশেই সাগর,- সাগরের বুকের উপর দিয়ে  এগিয়ে যাচ্ছি ভাবতেও বুকে হৈ চৈ হচ্ছিল খুব। দরজা জানালা বন্ধ বাসে করে এলেও নামতে গিয়ে , জিনিষপত্র সামলাতে ভিজতে হয়েছে দুজনকেই । মিনির জন্যই কষ্ট হচ্ছে খুব। নূতন জায়গায় এলে ঠাণ্ডা গরমের কোন অনুভূতি থাকে না আমার। উল্টো উত্তেজনা , গরমকে ঠাণ্ডা ও ঠাণ্ডাকে গরম করে তোলে। মিনির কষ্টে আমি নিজেকেই সম্পূর্ণ দায়ী করি । তবে, এরকম ভাবনাকে খুব দীর্ঘায়িত না করে হঠাৎই আমি সব জিনিষপত্র কাঁধে , হাতে ও বগলে নিতে শুরু করি । মিনিকে কোন ভারই দিতে চাই না। কিন্তু বড় স্যুটকেসটা নিয়েই হয় ঝামেলা। মিনিকে বললাম – চলো। - ওটা থাক।

         শুনে মনি হাসল,- হেসে স্যুটকেসটা তুলে নিল। দোতলার সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে বাইরের ঠাণ্ডা বাতাস খুব করে অনুভব করলাম ।

        এরকমটা কিন্তু হওয়ার কথা ছিল না। আমরা এত ঝামেলা পোয়াতে চাইনি । সেদিন লাক্সারি বাসের টিকিট কাটতেই মেট্রোর বারান্দা দিয়ে হাঁটছিলাম । মিনি আর আমি। মিনিকে বলি –-

-       এই বারান্দা ঘিরে আমার একটা দারুণ বিশ্বাসের ব্যাপার আছে। কারো সাথে দেখা হয়ই !

-       সেদিন তো ফিরেই যাচ্ছিলে ! বলেই মনি হাসে ।

-       ভাবছি, ফিরে গেলেই ভাল ছিল! কোন কিছু না ভেবেই দুষ্টু গাম্ভীর্যে কথাকটা বলি। শুনে মনি হাসে। খুব অপরিচিত হাসি।

      দু বৎসর আগে মিনির সঙ্গেই দেখা হয়েছিল । মিনিকে দেখাতে যাচ্ছিলাম দু বৎসরের পুরনো তবু খুব টাটকা স্মৃতির জায়গাটা। কিন্তু হঠাৎই মিনি আমার কাঁধ খামচে এক ভদ্রলোককে ডাকতে বলে। ‘রমানাথ বাবু’ বলে ডাকতে হবে। প্রথমে হতভম্ব পরে খুব সপ্রতিভ ভাবেই ডেকে আনি ভদ্রলোককে । মিনিদের পাড়ার লোক । মিনি বলে রমাদা—ওর রমাদা ওকে তুই। মিনি আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়,- ‘ এই রমাদা, রমানাথ চক্রবর্তী, তোমাকে বলিনি ?’ মিনি কখনও বলেনি, তবু বলতে হলো –-আপনার কথা খুব শুনেছি মিনির কাছে । আমার উত্তর শুনে মিনি হাসে। আমার কি অন্য কিছু বলা উচিত ছিল?

               ভেবেছিলাম নির্ভার থাকব। হোটেলে মোটেলে যেমন খুশি । কিন্তু মিনির ওর রমাদার উপর খুব শ্রদ্ধাভক্তি । উনিই বললেন কম খরচায় ব্যবস্থা করে দেবেন। আমাকে কিছুই করতে হলো না , সব ব্যবস্থাপত্র করে ভদ্রলোক আমাকে বললেন, ‘আসামে যাব একবার, ধুবড়িতে আমার এক বন্ধু থাকে, সমীর সেনগুপ্ত, খুব ভাল তবলা বাজায়, ওর বাড়িতেই যাব। তখন দেখা হবে নিশ্চয়?’ ধুবড়ি, শিলচরের দূরত্ব জেনেও মিনি হাসলো না। আমি ভদ্রলোককে দেখা হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিন্ত করলাম। মিনি তখনই হাসল।

       মেয়েছেলে সঙ্গে থাকলে কিছু বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায় অনেক সময়। ড্রাইভার লোকটিকে একবার বলতেই আমাদের পৌঁছে দিতে রাজি হয়। এত দুর্যোগের মধ্যেও মানুষ এত দয়ালু হয়! লোকটি শুধু একবারমাত্র একটি অসুবিধা দৃষ্টি দিয়ে মিনির দিকে তাকিয়েছিল । আমি কিছু মনে করিনি । কারণ সমুদ্রের এত কাছে এসেও সমুদ্র দেখতে না পারায় আমি খুব উত্তেজিত হয়ে আছি। দয়ালু লোকটাকে জিজ্ঞেস করি,- আচ্ছা দাদা,--আমরা কি সমুদ্রের পাশ দিয়ে যাচ্ছি ? লোকটা একবার আমার দিকে আর একবার মিনির দিকে তাকায় , তারপর জানায় , হ্যাঁ, প্রায় পাশ দিয়ে যাচ্ছি । কিছুই বুঝি না, আবার বলি, -- এল.আই.সি. বিল্ডিং থেকে সমুদ্র কতদূর হবে বলতে পারেন?

       এবার লোকটি নির্বিকার ভাবে জানায় – এই  কিছু দূর হবে ।

       অস্পষ্ট উত্তরে অসন্তুষ্ট হয়ে আমি মিনির দিকে তাকাই । অন্ধকারেও মিনির চোখের মনি দুটোর স্থানান্তর টের পাই। মিনি হাসে।

       রমাদার পরামর্শেই সেদিন লাক্সারি বাসের টিকিট কাটা হলো না। খড়গপুর লোকেল থেকে নেমেই ঝড়বৃষ্টি মাথায় করে উঠতে হলো এই ‘নোয়া’র বাসে। হাওড়া স্টেশনে যাওয়ার সময় একবার মাত্র মিনিকে বলেছিলাম,- কোলাঘাটে চা খাওয়া হলো না, শরৎসেতু দেখা হলো না, তাছাড়া বাসজার্নির মেজাজই আলাদা ।

     --তা হলে বাসেই চলো। মিনি বলে। আমার মতের বিরুদ্ধতা করা মিনির স্বভাব নয়। তবু ট্রেনে যাওয়াই ঠিক থাকে । আমার এ সিদ্ধন্তেও মিনি হাসে। আমি টিকিটের লাইনে দাঁড়িয়েও দোমনা হই ।

       থাক,তবু সব ঝামেলা কাটিয়ে আমরা দুশো বারো নম্বর ঘরের মুখোমুখি হলাম। সেখানেও নূতন বিভ্রাট। দুশো বারো নম্বর চাকতি লাগানো চাবি দিয়ে দুশো বারো নম্বর ঘরের তালা কিছুতেই খোলে না। মালপত্র সহ আমি মিনি আর একটা মাত্র টর্চ সম্বল। চৌকিদার লোকটিকে বেরই বা করি কি করে, মিনি আর আমি নিচে নেমে গেলে মালপত্রই বা দেখবে কে? মিনিকে বসিয়েও রাখা যায় না—কি জানি ভয়ও পেতে পারে! শৈশবের সেই অস্বস্তিকর নড়বড়ে সাঁকোর ধাঁধা মনে করেও জট খুলতে পারলাম না। ঘাসের আঁটি, বাঘ ও ছাগল । যে কোন একটা নিয়ে পারাপার  করা যায় । কিছুতেই জট খোলে না । হতবুদ্ধি হয়ে মিনির পরামর্শ চাই। মিনি বলে, --তালা ভেঙে ফেল। ও জানে এ কাজ আমি পারব না। তাই বলে ফেলেই হাসে মিনি । আমি মিনিকে নিয়ে নিচে নেমে আসি।

       বৃদ্ধ লোকটি প্রথমে ব্যাপারটি বুঝতেই চায় না। দুশো বারো  নম্বরের চাবি দিয়েই তো দুশো বারো নম্বর ঘর খুলবে । এরকম ব্যাপার তো কখনও হয় না । কিছুই বোঝে না । শেষ পর্যন্ত মিনির পরামর্শেই সবকটা চাবি নিয়ে লোকটি আমাদের সঙ্গে আসে। এ চাবি ও চাবি করে দুশো এগারো নম্বর দিয়েই খুললো  দুশো বারোর তালা । লোকটি খুব দুঃখিত হয়, আবোল তাবোল ক্ষমটমা চেয়ে নেয় বলে,--‘ বলেন তো সকালে আমি চা দিয়ে যেতে পারি , না হলে সামনের হোটেলে গিয়েও খেতে পারেন, সকালে রসও পাবেন প্রচুর, বেলা করে খাবেন না কিন্তু , গেঁজে যায় , নেশা হবে ।’ রসের ব্যাপার বুঝি না কিছুই । মিনি বলে দেয় ---

     --‘খেজুরের রস গো! এখানে খুব হয়,বেলা হলে তাড়ি হয়ে যায়’। মিনি জানেও এতসব । আমি বলি,--‘ খুব খাবো কিন্তু , --বেলা করেই খাবো’। আমার কথা শুনে মিনি হাসে ।

        লোকটি চলে যেতেই মনে পড়লো খাবার কিছু আনা হয়নি । এই দুর্যোগের রাতে কিছু পাওয়াও অসম্ভব । মিনির কথা ভেবেই অস্বস্তি হচ্ছিল খুব। সারারাত না খেয়ে থাকবে। আমার ভাবা উচিত ছিল । শেষ পর্যন্ত মিনির ভাঁড়ার থেকেই ফ্লাস্কের চা আর অর্ধেক প্যাকেট বিস্কুট বেরোল । দুজনেই হাত মুখ ধুয়ে টর্চের আলোয় খানকয় বিস্কুট আর প্রায় ঠাণ্ডা চা দিয়ে আমাদের অভিনব ডিনার শুরু করি । চায়ে চুমুক দিয়েই একটু নড়ে চড়ে বসলাম। বাইরে দারুণ ব্যাপার হচ্ছে নিশ্চয় । প্রচণ্ড শব্দ হচ্ছে বাইরে । যেমন তেমন ঝড়ের এত শব্দ থাকতে পারে না, একটা মিষ্টি মত তালে তালে , সমুদ্রের ঢেউই নিশ্চয়, ভেঙে পড়েছে । অনেকগুলো জেট প্লেনের ক্রমাগত ল্যান্ডিং আর টেক অফের মতো তুমুল ব্যাপার । শব্দ গুলো এত কাছের যে মনে হচ্ছে এই বাড়ির দেওয়ালে এসেই ঢেউগুলো ভাঙছে । টগবগে উত্তেজনায় মিনিকে বললাম একটা সিগারেট বের করে দিতে । সিগারেট ধরিয়ে দিল মিনি । দিয়াশলাইয়ের আলোয় মিনির মুখের দিকে তাকালাম , খুব অসুখী মনে হলো না ওকে । জড়িয়ে ধরে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললাম, ‘শুনতে পাচ্ছ?’

       মিনি বলল,-- হুঁ! আমি জানালা খুলে দিলাম । অন্ধকারে সাগরের অস্তিত্ব ঠিক বোঝা যায় না। বললাম,-- ব্বাঃ সাগর এত কাছে’?

       মিনি বলল,-- হুঁ! ওর মুখের পাশে মুখ রেখে আমি বললাম, -- ভয় করছে ?

      -- হুঁ! এবার স্পষ্ট দেখলাম মিনি হাসছে ।

      বললাম, -- ‘এল. আই. সি. এমপ্লয়ীরা খুব পয়সাওয়ালা , সাগর পারে এত বড় বড় বাড়ি বানিয়েছে।’  

      --‘এ বাড়ি কিন্তু  এল. আই. সির নয়, সরকারি বাড়ি এল. আই. জি লোয়ার ইনকাম গ্রুপ।’  আমার কাঁধে ওর থুতনির একটু চাপ দিয়ে কথাগুলি বলেই হাসে মিনি । মিনি যদি একটু শব্দ করে হাসত! মিনি তো জানে ওকে নিয়ে বড় হোটেলে উঠার সামর্থ্য আমার ছিল!

       ভোর হলো ঠিক চারটায় ।আমার ভোর । মিনি জাগিয়ে দিল ,--‘ ওঠো, সমুদ্রে চান করতে যাবে না?’ মিনিকে বলে রেখেছিলাম সাগর পারে যতদিন থাকব সাগরে চান করতে করতে সূর্যোদয় দেখব । ‘হুঁ’ বলে ঘুমঘুম চোখে ঘরের দিকে তাকালাম। মিনি অনেকক্ষণ হলো উঠেছে । ঝড় ও থেমে গেছে কখন । হয়তো রাতেই । মিনি ঘরটাকে গুছিয়ে নিয়েছে । ছড়ানো ছিটানো শালপাতা , ছেঁড়া কাগজ, কিছুই নেই ঘরে । মিনিকে বেশ বউ বউ লাগছিল । চশমা ছাড়া মিনিকে অন্য মিনি লাগছিল । দেবীর মতো । ভাবলাম বলেই ফেলি কবিতায়, --‘প্রাতে কখন দেবীর বেশে তুমি সমুখে উদিলে হেসে ।’ কেন জানি লাইনটাকে পছন্দ করেও বলতে পারলাম না । কাছে ডাকলাম ওকে । কাছে আসতে বললাম। কানের কাছে মুখ নিয়ে এলো , বললো ,--‘সমুদ্র কিন্তু খুব কাছে নয়।’ বিশ্বাস করি কী করে, কানের কাছে এখনও টেকঅফের শব্দ পাচ্ছি । জানলা থেকেই সাগর দেখা যাবে ভেবে দু কনুই এ ভর দিয়ে জানালা খুলে দিই। চোখ দুটো বন্ধ করেই রাখি । কানামাছি খোলার মতো ডাক দিই সাগরকে ,

      --‘ আয়রে আমার সাগর’ চোখ খুলি ,

      -- কোথায়,কই সাগর? কোথাও তো সমুদ্র নেই । কিছু উঁচু নিচু টিলা আর ছড়ানো ছিটানো বাড়িঘর রয়েছে সামনে । কাল রাতের অন্ধকারে এসবকেই সাগর ভেবেছিলাম । মিনির দিকে ফিরে দেখলাম , -- খুব মিহিন হাসি মুখে নিয়ে আমার সাগর দেখা উপভোগ করছে। চোখে চোখ পড়তেই বলল,--‘ চলো—রিক্সা করে যেতে হবে, অনেক রিক্সা রয়েছে নিচে। ’

---‘হ্যাঁ চলো, কখন আবার সূর্য উঠে যাবে’ বলে দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আড়মোড়া ভাঙলাম ।



শতক্রতু ১৯৭৬

কোন মন্তব্য নেই: